শনিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

Je Jole Agun Jole-Helal Hafiz ।। যে জলে আগুন জ্বলে -হেলাল হাফিজ ।। সর্বাধিক বিক্রিত কবিতার বই রিভিউ

  

এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়

কিংবা,

নিউট্রন বোমা বোঝ

মানুষ বোঝ না !

এই লাইনগুলো আমরা আমাদের জীবনে বহুবার শুনেছি বা পড়েছি। অনেকেই হয়তো জানেন এই লাইনগুলো লিখেছেন হেলাল হাফিজ।


আজকে আমার ডানপাশে যেই বইটি দেখতে পাচ্ছেন অর্থাৎ যে জলে আগুন জ্বলে বইটি হেলাল হাফিজের লেখা।বইটি বইটি হেলাল হাফিজকে এনে দিয়েছিল আকাশসমান জনপ্রিয়তা। এই কাব্যগ্রন্থটি বাংলা কবিতার ইতিহাসে অন্যতম বহুল পঠিত একটি বই। এটি ১৯৮৬ সালে প্রকাশ হয়। এই একটা বই লিখেই রূপকথার নায়ক হয়ে ওঠেন হাফিজ।  

এ বইয়ের ফেরিওয়ালা, প্রস্থান, যাতায়াত, নিষিদ্ধ

সম্পাদকীয় সহ কিছু কবিতা তো চরম জনপ্রিয়। ৯০ এর দশকে আনন্দোলনে তার নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় কবিতার ' এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়' লাইনগুলো আন্দোলন কারীদের ব্যানারে,প্ল্যাকার্ডে, মুখে মুখে ফিরতো।

এই বইটির জন্য লেখক অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এত ধৈর্য স্থৈর্য ও সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন যে, শুনলে অবাক হবারই কথা। সতের বছর লেখালেখির পর ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ বইটি প্রকাশ করেছেন। বইটি বেরোনোর আগেই তার জেদ ছিল এবং আকাঙ্ক্ষা ছিল, এই বইটি যেন অন্যান্য কবিতার বইয়ের মতো জলে ভেসে না যায়।

যে জলে আগুন জ্বলে’ বইএ রয়েছে  প্রায় ৬০ টি কবিতা।আমার kache থাকা কপিটি বইয়ের ৩১তম মুদ্রণের।

তবে দুঃখের কথা হচ্ছে কবির এটাই একমাত্র কাব্য গ্রন্থ। দীর্ঘ ২০ বছরের অধিক সময়েও কবি আর কোনো কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেন নি।

বইটি মেলায় সর্বাধিক বিক্রীত শুধু নয়, উপন্যাসের চেয়েও সে বছর বইটি বেশি বিক্রি হয়েছিল। তারপর গত অনেক বছরে বইটি ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। পাঠকমহলে দিনে দিনে বইটির প্রতি আগ্রহ কেবলই বেড়েছে। কিন্তু ক্ষতিও হয়েছে তার। 

একটা সাক্ষাৎকারে একবার কবি বলেছিলেন, তিনি আরেকটা কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করতে এই ভয় পাচ্ছিলেন যে, নতুন বই যদি প্রথমটাকে ছাড়িয়ে যেতে না পারে? আমি যে নতুন করে লিখব, আমার লেখা যদি মানুষ পছন্দ না করে! আমার কবিতা যদি ‘যে জলে আগুন জ্বলে’র কবিতার কাছাকাছি না যেতে পারে! আমার কবিতা যদি মানুষ না পড়তে চায়।’ এই এক অদ্ভুত আতঙ্ক তার মধ্যে তৈরি হলো এবং এই ভয়ে তিনি নতুন বই বের করার চিন্তা থেকে পালিয়ে সুদীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময় লোকচক্ষুর অন্তরালে স্বেচ্ছা নির্বাসিত জীবন যাপন করেছেন, জুয়া খেলেছেন, ভবগুরে জীবন কাটিয়েছেন।

আসলে  কবি তো বটেই, কোনো লেখাই উপন্যাস হোক, ছোটগল্প হোক, প্রবন্ধ হোক- এক লেখকের সব লেখা এক মানের হয় না। কোনো লেখা একটু বেশি ভালো হয়, একটা মধ্যম মানের হয়। কিন্তু এই ভীতি তার আর কাটলো না। বরং যত দিন যেতে লাগলো, ততই তার বইটির জনপ্রিয়তা চললো বেড়ে।

তখন মোবাইল ফোন ছিল না। চিঠি-ই ছিল যোগাযোগের মাধ্যম।  শ’য়ে শ’য়ে চিঠি আসতে থাকে কবির কাছে। তাতে থাকতো নানা ধরনের কৌতূহল আর প্রশ্ন। এই যেমন-তিনি কেন লেখেন না? হেলেন কে? এই সবিতা সেন কে? হিরণ বালা কে? ইত্যাদি। এই নামগুলো তার কবিতার মধ্যে রয়েছে।

 

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Thank you for your valuable comment.