শনিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২০

Hachi: A Dog's Tale (Bangla Review)

                                                    MOVIE: Hachi: A Dog's Tale
Main Actor: Richard Gere
গল্পঃ বেড্রীজে প্রফেসর পার্কার কাজ শেষ করে বাসায় ফেরার সময় ট্রেন স্টেশন এর রাস্তায় একটি কুকুর দেখতে পান।তার নাম তিনি দিয়েছিলেন হ্যাচি। পরে তিনি হ্যাচিকে তার প্রকৃত মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেবেন এই ভেবে বাসায় নিয়ে আসেন।কিন্তু কেউ হ্যাচিকে নিজেদের বলে দাবি করলোনা তখন তারা সিদ্ধান্ত নিলেন যে হ্যাচিকে নিজেদের সাথে রাখবেন।এভাবে প্রফেসর পার্কার এবং হ্যাচি দু’জন ভালো বন্ধুভাবাপন্ন হয়ে গেল।প্রফেসর তার গন্তব্যস্থলে যাওয়ার সময় হ্যাচি নিজেই তার সাথে যেত আর ফিরে আসার সময়ও হ্যাচি আবার স্টেশনে তারজন্য অপেক্ষা করত।একদিন প্রফেসর পার্কার হঠাত করেই মারা যান তবুও হ্যাচি তারজন্য স্টেশনে অপেক্ষা করতেন,যেখানে যেখানে তাকে সবসময় নিয়ে যাওয়া হত সবগুলো জায়গা খুঁজে দেখত কিন্তু মণিব আর ফিরতো না।পার্কারের স্ত্রী দশ বছর পর সেই রেল স্টেশনে এসে এটা দেখে অবাক হয়ে যান যে ,হ্যাচি তার মনিবের জন্য আজো অপেক্ষা করছে।
Poster Credit: IMDB

দৃষ্টিকোনঃ
বিশ্বাস,ভালোবাসা এমন একটা জিনিষ যেটা অনন্ত। 

যারা বিশ্বাসের মুল্য সম্পর্কে জানতে চান তারা মুভি টি দেখে কিছু বুঝতে পারবেন।
** মূলত হ্যাচি ছিলো জাপানে জন্মগ্রহণ করা একটি কুকুর।তার প্রভু ডক্টর ইউএনো ছিলো জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর।প্রফেসর এর মৃতু্যুর পর নয় বছর ধরে হ্যাচি প্রতিদিন শিবুয়া ট্রেন স্টেশনে তার প্রভুর জন্য অপেক্ষা করতো।

Movie: A Beautiful Mind ( Bangla Review)

                                             Movie: A Beautiful Mind 
                                পরিচালকঃ রন হাওয়ার্ড 
                             প্রধান চরিত্রঃ রাসেল ক্রো (জন ন্যাশ) 
                                                 জেনিফার কনেলি (অ্যালিসিয়া ন্যাশ)
                                                 ক্রিস্টোফার প্লামার (ড. রজেন) 
                                                 পল বেত্তানি (চার্লস) 

(মুভিটি আমেরিকান গণিতবিদ জন ন্যাশ,অর্থনীতিতে নোবেল বিজয়ী এবং অ্যাবেল পুরস্কার বিজয়ী এর জীবন অবলম্বনে নির্মিত )

ঘটনাটি শুরু হয় প্রিস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ক্লাসের মাধ্যমে যেখানে ন্যাশ ছিলেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক শিক্ষার্থী। ন্যাশ ছিলেন প্যারানয়েড সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত। ন্যাশের রুমমেট চার্লস ছিলেন সাহিত্যের ছাত্র। একবার এক পার্টিতে ন্যাশ চার্লসকে বলেছেন যে, তিনি লোকদের চেয়ে সংখ্যায় ভালো। কিন্তু সেটা তিনি এক স্বর্ণকেশী রমণীর সামনে প্রমান করতে ব্যার্থ হন এবং তার অন্যান্য বন্ধুদের সাথেও তার তখন খারাপ একটা সম্পর্ক হয়ে যায়।
ন্যাশ তার থিসিসের জন্য সবসময় সত্যিকারের আসল ঘটনা খোঁজার চেষ্টা করতেন এবং সেটা করার জন্য নিজেকে সবসময় কাজের মাধ্যমে চাপে রাখতেন। একদিন তিনি বারে এক মহিলার সাথে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান প্রাপ্ত হন কারণ তিনি সরাসরিই তাকে সঙ্গমের অফার করে ফেলেছিলেন। এবং এই প্রত্যাখ্যান পরবর্তীতে তাকে গাণিতিক অর্থনীতিতে একটি তত্ব পরিচালনার গতিবিদ্যার ধারণায় তার কাজকে অন্যদের কাছে অনুপ্রাণিত করে। 
Poster Credit: IMDB !

প্রিস্টনে ন্যাশের পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর তিনি এবং তার বন্ধু সল ও বেন্ডার সহ এমআইটিতে তারা একটি মর্যাদাপূর্ণ পজিশনে যোগদান করেন। ৫বছর এমআইটিতে ক্যালকুলাস পড়ানোর সময় তার সাথে তার একজন শিক্ষার্থী অ্যালিসিয়া ন্যাশের সাথে তার পরিচয় হয় এবং যাকে তিনি বিয়ে করেন। 

প্রিস্টনের প্রত্যাবর্তন সফরে ন্যাশ তার রুমমেট চার্লস এবং তার ভাগ্নীর সাথে দেখা করেন।ন্যাশকে পেন্টাগনে মার্কিন গোপনীয় প্রতিরক্ষা বিভাগে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো যেখানে তিনি অন্যান্য কোডব্রেকার চেয়েও ভালো করে একটি কোড ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হন।সেখানে উপর থেকে পার্চার এটি গোপনে দেখছিলেন এবং তিনি ন্যাশকে একটি অ্যাসাইনমেন্ট দিলেন।যেখানে ন্যাশের দায়িত্ব ছিলো সোভিয়েতের প্লটটি ব্যর্থ করার জন্য প্রতিবেদন লেখা এবং মেইল বক্সে জমা দেওয়া। বলা বাহুল্য যে, রাশিয়ানদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার কারণে ন্যাশ তখন থেকে আস্তে আস্তে খারাপ আচরণ শুরু করে। তখন তার এই আচরণ পর্যবেক্ষণ করে তার স্ত্রী অ্যালিসিয়া পার্চারের ন্যাশকে দেওয়া কাজ অর্থাৎ মেইল বক্স চেক করেন যেগুলো ছিলো টপ সিক্রেট। 
পরবর্তীতে বোঝা যায় যে ন্যাশকে দেওয়া চার্লসের কাজগুলো ছিলো সম্পূর্ণ বিভ্রান্তি। যেখানে তার বন্ধু চার্লস এবং চার্লসের ভাগ্নি তার পুরো মাথা জেঁকে বসেছিলো। যেটা কিনা ন্যাশের একটা মানসিক রোগ হয়ে গিয়েছে। 
পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় যেখানে এমন এক এন্টিবায়োটিক তার শরীরে পুশ করা হয় যার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে ন্যাশ এবং তার স্ত্রীর সম্পর্ক খারাপ হয়ে যায়।
এভাবে মোটামুটি মাঝে আরো অনেক ঘটনাই ঘটে যেখানে কিনা ন্যাশের একজন ছেলেও হয়।
সবশেষে ন্যাশ যখন প্রবীণ বয়সে চলে যান তখন তিনি তার বন্ধু মার্টিন হ্যাসেনের সাথে যোগাযোগ করেন যিনি বর্তমানে প্রিন্সটন এ গণিত বিভাগের প্রধান। এভাবে ন্যাশ আবার পড়ানোর সুযোগ পান এবং তিনি গণিতের কৃতিত্বের জন্য তাঁর সহ-অধ্যাপক দ্বারা সম্মানিত হন। সর্বশেষে গেম থিওরির জন্য অর্থনীতিতে নোবেল স্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন। যখন তারা স্টক হোম ছেড়ে যাচ্ছিলেন তখনও ন্যাশ আগের ঘটনাগুলো উপলব্ধি করেন যেখানে তার রুমমেট চার্লস এবং তার ভাগ্নী ছিলো।
ন্যাশে তার সম্পূর্ণ জীবন আবার স্বাভাবিকভাবে ফিরে পেয়েছেন শুধুমাত্র তার স্ত্রীর সেবার জন্য। আমার মনে হয়,এখানে A Beautiful Mind কথাটা তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে।
(আপনাদের কি মনে হয় জানাবেন) 
ন্যাশ তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে স্টকহোম এর বক্তৃতায় একটা কথা বলেছেন।
যেটা হলো - "সারাজীবন ধরে খোঁজার পর আমি নিজেকে জিজ্ঞাসা করলাম, যুক্তি বিষয়টি আসলে কি? আমি আবিষ্কার করেছি আমার সারা জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সেটা হলো, 'ভালোবাসা রহস্যময় এক সমীকরণ, পৃথিবীতে একমাত্র যেটাকে যৌক্তিক ও অর্থপূর্ণ বলা যায়। ' আমি আজ রাতে এখানে এসেছি শুধু তোমার কারণেই! "


127 Hours! (Movie Review in Bangla)

Movie: 127 Hours!

  • প্রধান চরিত্রঃ জেমস ফ্রানকো ( আরন রালস্টন)
  • কেট মারা(ক্রিস্টি)
  • অ্যাম্বার টাম্বলাইন( মেগান)
(মুভিটি একজন সত্যিকারের পর্বতারোহী আরন রালস্টন সম্পর্কে। যিনি কিনা একটা গিরিখাদের ফাঁদ থেকে নিজেকে জীবিত বের করতে সক্ষম হয়েছেন)
127 Hours movie Poster! 
Image Copyright:IMDB
২০০৩ সালে আরন রালস্টন ছিলেন একজন পর্বতারোহী এবং একজন অতিমাত্রায় খেলাধুলায় আসক্ত ব্যাক্তি। যিনি একসপ্তাহন্তে উটাহ্ এর ব্লু জন ক্যানিয়নে হাইকিং এ বেরিয়েছিলেন। তিনি কোথায় যাচ্ছেন তা কাউকে জানান নি। তারকাছে কোন মোবাইল ফোনও তখন ওই সময়ে ছিলোনা যে তিনি কারো সাথে যোগাযোগ করবেন। তার প্রিয় সাইকেল নিয়ে তিনি বেরিয়ে পরলেন এবং পথিমধ্যে তার সাথে ক্রিস্টি এবং মেগানের সাথে দেখা হয়।তারা তাদের গন্তব্য হারিয়ে ফেলেন। রালস্টন তাদের কে তাদের গন্তব্য ডোমে নিয়ে গেলেন যেখানে বলতে গেলে তিনি একজন গাইড হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
এরপর সেখানে কিছু সময় কাটিয়ে ক্রিস্টি এবং মেগান জানান যে তারা একটা পার্টিতে এটেন্ড করবে যেটা হচ্ছে গ্রিন নদীর তীরে। তারা রালস্টনকে যাওয়ার জন্য অফার করে কিন্তু রালস্টন সেটা রিফিউজ করে এবং সে গিরিখাতে আরোহন করার জন্য যাত্রা শুরু করে। গিরিখাতে আরোহনের সময়ই তারসাথে নিয়তির খারাপ মুহূর্ত শুরু হয়।
হাঠাৎ এক বিশাল পাথরের সাথে হাত লেগে সে পাথরটি সহ মূহুর্তেই নিচে পড়ে যায় এবং ওই একই পাথরের সাথে তার এক হাত এমনভাবে আটকে যায় যে সেটা পরে ওই গিরিখাদেই তাকে নিজের হাত নিজেকেই কনুইয়ের উপরে কেটে ফেলতে হয়। ওই হাতটি যখন আটকে যায় খিরিখাদে তখন তিনি নিজেকে কিভাবে সেখানে টিকিয়ে রেখেছেন তা নিয়েই মূলত এই '১২৭ ঘন্টা'।
ঘটনাটি শুরু হয় শনিবারে।ওই সময়ে তিনি নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য তার খাবার পানিকে কাজে লাগিয়েছেন সাথে তার ত্যাগকৃত ইউরিনকেও তিনি ব্যবহার করেছেন পানীয় হিসেবে। রালস্টনের পকেটে থাকা ছোট একটা ছুরি যেটা কিনা পরবর্তীতে তিনি তার নিজের হাতকে কাটতে ব্যবহার করেন। ওই ছোট ছুরি দিয়ে তিনি অনেক চেস্টা করেছেন এটার জন্য যে, যদি কোনভাবে পাথর খুঁটিয়ে নিজের হাতটাকে আটকে পড়া থেকে বাঁচাতে পারেন। শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিনি নিজেকে নানাভাবে অনুপ্রাণিত করেছেন শুধুমাত্র বেঁচে থাকার জন্য। তিনি কল্পনায় সবার সাথে যোগাযোগ করেছেন,মা-বাবার সাথে কথা বলেছেন,কখনো খেলার মাঠে তো কখনো সুইমিংপুলের মধ্যে নিজের অস্তিত্বকে খুঁজে নিয়েছেন।

শুধুমাত্র বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষের মনের জোরই কিংবা ইচ্ছাশক্তিই হলো সবচেয়ে বড় হাতিয়ার।
Personal Rating: 7/10
©Ananda Mohan Shil