রামের সুমতি বাংলা সাহিত্যের অপরাজেয় কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত গল্প।গল্পটি ১৯১৪ সালে প্রকাশিত হয়। এতে গল্পকার মানুষের সাথে মানুষের আত্মিক সম্পর্কের চিত্র তুলে ধরেছেন।
এখন রামের সুমতি গল্পের রিভিউতে
আসা যাক।
রামলাল গ্রামের এক দুরন্ত কিশোর। সব ব্যাপারেই তার দুস্টুবুদ্ধির কারণে গ্রামের সবাই ভীত থাকে। এমনকি তার দুরন্তপনার সংবাদ আশেপাশের গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। তার দুরন্তপনার একান্ত সহযোগী ভৃত্য ভোলা। অপরদিকে তার বৈমাত্রেয় বড় ভাই শ্যামলাল শান্ত প্রকৃতির। সে গ্রামের কাছারীতে কাজ করে ও পৈতৃক সম্পত্তি দেখাশুনা করে। তার স্ত্রী নারায়ণী যে বছর ঘরে আসে তখন রামের মা আড়াই বছরের রামকে তার হাতে দিয়ে মারা যান। সেই থেকে নারায়ণী রামকে কোলে পিঠে মানুষ করেছে। তাই রামের দুরন্তপনা ও বদমেজাজ ভৃত্য ভোলা, নৃত্যকালী এমনকি বড় ভাই শ্যামলালের উপর খাটালেও বউদিকে সে মান্য করে। বউদির জ্বর ভালো
না হলে ডাক্তারকে শাসিয়ে আসে। তাদের সুখের সংসারে বিঘ্ন ঘটে নারায়ণীর মা দিগম্বরী আর ছোট বোন সুরধুনীর আগমনে। দিগম্বরী সব সময় রামের পিছনে লেগে থাকে।" রামের
সুমতি গল্পে, রাম ছোটবেলা থেকে বৌদির কাছে বড় হয়। তাঁর সব
অাহ্লাদি বৌদির কাছে। ১৭/১৮ বছর বয়সেও সেই বৌদির কোলে মাথা গুজে। বৌদির হাতে ভাত খায়।
রাম
চঞ্চলপ্রকৃতির একজন ছেলে। সারাদিন এদিক-ওদিক ছুটে। বৌদি তাকে প্রশ্রয় দেয় বলে সবাই
নারাণিকে দোষারূপ করে। নারাণি এসব কথা কানে নেন না। পরম মমতায় মায়ের মতো করে রামকে
বড় করে তুলে।
এদিকে
নারাণির মা দিগম্বরী ছোট মেয়েকে নিয়ে রামের বাড়িতে চলে এসেছে। স্থায়ীভাবে এখানে
থাকবে। দিগম্বরী রামকে দুচোখে সহ্য করতে পারে না। সুযোগ বুঝে রামের দোষ প্রচার করে
দিগম্বরী। রামকে বিষিয়ে তুলে। রামও ডাকে ডাইনী,
বুড়ি ইত্যাদি ডাকে।
দিগম্বরী
মুখ বুঝে মায়ের সব অন্যায় সহ্য করে।
একদিন রাম
পেয়ারা গাছে উঠে পেয়ারা খাওয়ার সময় দিগম্বরী তাকে কটাক্ষ করলে রাম তাকে
উদ্দেশ্য করে পেয়ারা ছুড়ে মারে যা নারায়ণীর মাথায় লাগে। এই ঘটনার পর শ্যামলাল
দুই ভাইয়ের সম্পত্তি ভাগ করে ও নারায়ণীকে রামের সাথে কথা বলতে নিষেধ করে দেয়। বলতে
গেলে দিগম্বরী একসময় রামকে অালাদা করে দিতে সক্ষম হয়। সবকিছু ভাগ হয়ে যায়। বাড়ির
মাঝখানে বেড়া দিয়ে দেওয়া হয়। ঘর ভাগ করে দিয়ে দেওয়া হয়। তিনদিন ধরে রাম কিছু খায়
না। বেড়ার ঐপাশে নারাণিও খায় না।
এভাবে আপনজন
শূন্যতায় সে তার ভুলগুলো বুঝতে পারে ও তার সুমতি হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
Thank you for your valuable comment.